কাপ্তাই উপজেলার আয়তন ২৫৯ বর্গ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটি পার্বত্য জেলার অন্তর্গত কাপ্তাই উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২২°২১′ হতে ২২°৩৫′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°৫′ হতে ৯২°১৮′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। এই উপজেলার উত্তরে কাউখালী ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা, পূর্বে বিলাইছড়ি ও রাজস্থলী উপজেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও দক্ষিণে রাজস্থলী উপজেলা।
কাপ্তাই উপজেলার নামকরণে 'কত্থয়' ও 'কিয়ং' শব্দ দু'টির প্রভাব রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। কত্থয় অর্থ কোমর আর কিয়ং অর্থ খাল। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে 'পার্বত্য চট্টগ্রাম'-কে চট্টগ্রাম জেলা থেকে আলাদা করে নতুন জেলা সৃষ্টি করার পর কাপ্তাই এর চন্দ্রঘোনায় এর সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়। । কাপ্তাই থানা সৃষ্টি হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৫ সালে। কাপ্তাইকে উপজেলায় রূপান্তরের পূর্ব পর্যন্ত এটি রাঙামাটি পার্বত্য জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ উপজেলায় বাঙালিসহ চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরং, খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়া জাতিসত্বার বসবাস রয়েছে।
কাপ্তাই উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন, ১০টি মৌজা, ১৪৮টি গ্রাম রয়েছে।[২] ইউনিয়নগুলো হচ্ছে- কাপ্তাই, চিতমরম, ওয়াগ্গা, রাইখালী ও চন্দ্রঘোনা।[৩]থানা রয়েছে ২ টি (কাপ্তাই ও চন্দ্রঘোনা)। উপজেলা শহর ২টি মৌজা নিয়ে গঠিত। উপজেলা শহরের আয়তন ১২৬.৯১ বর্গ কিমি এবং জনসংখ্যা ৩৭৭২০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমি ২৯৭ জন।
২০১১ সালের আদমশুমারী অনুসারে এই উপজেলার লোকসংখ্যা ৬৬১৩৫ জন; এর মধ্যে পুরূষ ৩৬৬৭৭ জন ও মহিলা ২৯৪৫৮ জন।[৪] জনসংখ্যার হার প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৫৫ জন। এখানে মুসলমান ৬২.৭৮%, হিন্দু ৫.৯৫%, বৌদ্ধ ৩০.৪৯%, খ্রিষ্টান ০.৬৯% এবং অন্যান্য ০.০৯%।
কাপ্তাই উপজেলার গড় শিক্ষার হার ৬০%; যার মধ্যে পুরূষ ৫১.৪৮% এবং নারী ৬৭%।[৫] কাপ্তাই উপজেলাতে ২টি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২টি কিন্ডারগার্ডেন, ২টি কলেজ, ২টি দাখিল মাদ্রাসা, ২টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, ৬৮টি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা রয়েছে।[৬] এছাড়াও কারিগরি শিক্ষার জন্য আছে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
কাপ্তাইয়ের কৃষি, মত্স্যসম্পদ, বনজ সম্পদ, রেয়নশিল্প ও শিল্পকারখানাগুলি এর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের প্রধান জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, উপমহাদেশের সর্ববৃহত্ কাগজের কল কর্ণফুলী পেপার মিলস, ওয়াগ্গা টি ষ্টেট, কাঠ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা ও বাংলাদেশ টিম্বার এই উপজেলায় অবস্থিত। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উত্পাদন কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের সাহায্যে উত্পাদিত ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে। মূলত জলবিদ্যুৎ উত্পন্ন করার জন্য কর্ণফুলী নদী'তে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি করা হলেও, এই জলাধারে প্রচুর পরিমাণে মিঠাপানির মাছ চাষ হয়। নৌবিহার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও কৃষি আবাদ ইত্যাদিতেও এর অবদান উল্লেখযোগ্য।
দর্শনীয় স্থান
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস